স্টাফ রিপোর্টার ॥ রূপদিয়া কলেজের তথ্য ও প্রযুক্তি শাখার ল্যাব সহকারি ও যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোষাধক্ষ এম ডি ইয়াসিন আলী সোহাগ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমেরিকা প্রবাসীর জমি দখল, মারপিট ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে জিহাদী হোসেন সবুজ নামের ওই প্রবাসী।

মামলার উল্লেখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানাযায়, রূপদিয়া শহীদস্মৃতি মহা বিদ্যালয়ের তথ্য-প্রযুক্তি শাখার ল্যাব সহকারি ও (সমিতি বোর্ড) যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কোষাধক্ষ এম ডি ইয়াসিন আলী সোহাগ দির্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে নিজেদের রেখেছে। সম্প্রতি জিহাদী আমেরিকা থেকে ফিরে নিজ জমিতে প্রাচির নির্মান করতে গেলে বাঁধসাধেন ইয়াছিন আলী সোহাগ। এক পর্যয়ে তার দখলে থাকা জমিটি ফেরৎ পেতে চাইলে প্রবাসী জিহাদের কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। এই টাকা না দেওয়া পর্যন্ত জমি দেওয়া ফেরৎ দিবে না বলে চৌর করেন। একই সাথে দির্ঘদিন ধরে ওই আমেরিকা প্রবাসী ও পরিবারের সদস্যদের’কে বিভিন্ন সময় খুন-যখম করার হুমকি প্রদান করে আসছে।

আমেরিকা প্রবাসী যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মো: আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জিহাদী হোসেন সবুজ (২৫) যশোর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে দুই জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১০/১১ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হলেন চাউলিয়া (গোডাউন) এলাকার বাসিন্দা হোমিও চিকিৎসক ইউনুচ আলীর ছেলে ইয়াসিন আলী সোহাগ (২৭) ও আব্দুর রহিম দফাদারের ছেলে ইউনুচ আলী সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১১ জন। ওই প্রবাসীর করা মামলার ফরিয়াদি বিবরণে বলা হয়েছে যশোর জেলার, কোতয়ালী থানাধীন (চাউলিয়া) ২১০-মৌজা, আরএস ৮২/২২৩, দাগ নং ২৬৩/২৬৪/২৬৬ জমির পরিমান ২১ শতক; খন্ড’টি আমি (জিহাদী হোসেন) খরিদ করিয়া উহাতে স্বত্ববান ও দখিলকার রহিয়াছি। উক্ত জমিতে আমি রাজমিস্ত্রী দ্বারা কাজ করাইতেছি। ০১ ও ০২ নং আসামীদ্বয় আমার স্বত্ব দখলীয় তফসিল জমির পশ্চিম পাশের জমির মালিক।

তাহারা অত্যন্ত দুর্দান্ত ও দু:স্প্রকৃতির ব্যক্তি। তাহারা আমার মালিকানাধীন তফসিল জমি জোর পূর্বক দখল করিয়া লইবার জন্য ঘোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রহিয়াছে। সম্প্রতি আমার জমিতে প্রাচীর নির্মানের কাজ চলাবস্থায় আসামীগণ আমার নিকট চাঁদা হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করিয়া আসিতে থাকে। আমি সব সময়ই আসামীগণকে চাঁদা প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিয়া আসিতেছি। এমতবস্থায় গত ১৭ মার্চ ২০২১ ইং বুধবার আমাদের বসতবাড়ির পূর্ব পোতার বসত ঘরে রাত্রের খাবার-দাবার শেষ করে বিছানায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি লইতে ছিলাম; তখন ১/২ নং আসামীদ্বয় তাহাদের সাথে আরও অজ্ঞাত নামা ১০/১১ জন ব্যাক্তি একযোগে লোহার রড ও বাঁশের লাঠিসহ অবৈধ জনতায় দলবদ্ধ হইয়া আমাদের বসত বাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করিয়া অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করিয়া আমাকে ডাকাডাকি করিতে থাকে। আমি বসত ঘরের দরজা খুলিয়া বাহিরে আসামাত্র আসামীদ্বয় ও অজ্ঞাত ১০/১১ জন ব্যাক্তি আমাকে মারপিট করিতে উদ্যত হয়।

আসামীদ্বয় এবং অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিরা সমন্বয়ে চিৎকার করিয়া বলে যে, আমরা দীর্ঘদিন যাবত তোমাদের নিকট ৫ লক্ষ টাকা দাবী করিয়া আসিতেছি। কিন্তু এতদিনে দাও নাই। এক্ষুনি উক্ত টাকা দিতে হবে। এরুপ বাক্যালাপ করিয়া আসামীগণ আমার বসত বাড়ির পূর্ব কক্ষে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করিয়া শোকেসের ড্রয়ের মধ্যে রক্ষিত নগদ ১ লক্ষ টাকা বাহির করিয়া লয়। উক্ত টাকা আমি আমার বসত বাড়ীর প্রাচীর নির্মাণের জন্য রাখিয়া ছিলাম। আমি বাঁধা দান করিয়াও রক্ষা করিতে পারি নাই। আসামীগণ যাইবার কালে প্রকাশ্যভাবে ঘোষনা করিয়া যায় যে, অদ্য ১ লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে লইলাম। বাকী ৪ চার লক্ষ টাকা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাদেরকে না দিলে বাড়ীর সকলকে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া দিবে। আসামীগণ তাহাদের হাতের অস্ত্রাদি প্রদর্শন করিয়া আমাদের জীবন নাশের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করিয়া পশ্চিম দিকে চলিয়া যায়। ১/২ নং আসামীদ্বয়ের হাতে লোহার রড এবং অজ্ঞাত নামা ১০/১১ ব্যাক্তির নিকট বাঁশের লাঠি ছিল। অসৎ উদ্দেশ্য লাভবান হইবার জন্য আসামীগণ অত্র ঘটনা সংঘটিত করিয়াছে। একাধিক স্বাক্ষীগণ ঘটনা অবগত আছেন। মূলত: প্রবাসী জিহাদী হোসেন আমেরিকায় ব্যবসা করেন। মামাদের থেকে জমি ক্রয়ের পর একাধিক সরকারী/বেসরকারী সার্ভেয়ার জমি’টি পরিমাপের পর এ জটিলতার সৃষ্টি হয়। প্রবাসী হওয়ায় স্বল্প দিনেই পুরো জমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখার কাজ চলাকালীন এসব বাধা বিপত্তির স্বীকার হওয়ায় জিহাদী হোসেন উপযুক্ত অবস্থাদি বিবেচনা ও সঠিক তদন্তপূর্বক আসামীগণের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারী করত: হাজতাবদ্ধ করে মকদ্দমার সু-বিচার চেয়ে গত ২১ মার্চ ২০২১ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত যশোর বরাবর এমামলাটি দায়ের করেন যার নং-১৪৩/১৪৭/১৪৮/৪৪৭/৪৪৮/৩৮৫/৩৮৬/৩৮৭/৫০৬(২) পেনাল কোড । এনিয়ে অভিযুক্ত ইয়াছিন আলী সোহাগের ব্যবহৃত ০১৭১০-৪৫০২৩২ নাম্বারে ফোন করে রিসিভ না করায় বক্ত নেওয়া সম্ভাব হয়নি।